সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় নিজ এলাকার শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানার পাশে পুনরায় দাফন করা হবে বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিছ চৌধুরীর লাশ। এই মাদরাসাটি হারিছ চৌধুরীর নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাজরিনের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিনিধি দল। এ সময় হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিম চৌধুরী এবং তার আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়ছল আহমদ, স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
হারিছ চৌধুরীর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার পিতা শফিকুল হক চৌধুরীর নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানা প্রাঙ্গণে তার লাশ পুনরায় দাফন করা হবে। তবে, কবে দাফন করা হবে তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর চলতি মাসে দাফন কার্য সম্পন্ন হতে পারে বলে জানা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধার সম্মাননায় কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম হারিছ চৌধুরীর লাশ তার পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাফন করা হবে। কবরের জায়গার স্থান সেভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা ফয়ছল আহমদ বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযোদ্ধা আবুল হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। কিন্তু তিনি দেশ থেকে কোথাও পালিয়ে যাননি, তিনি ঢাকাতে আত্মগোপনে ছিলেন। আমি বিভিন্ন সময়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেছি এবং সবসময় যোগাযোগ ছিল। স্বাধীন দেশে মুক্তভাবে হারিছ চৌধুরীর লাশ তার নিজ এলাকা সিলেটের কানাইঘাটে এখন দাফন করা হবে।
হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা নানাভাবে অবিচারসহ হয়রানীর শিকার হয়েছি। আমার বাবা মারা যাওয়ার পরও সে সময় সরকারকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার পাইনি। উল্টো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি এবং তার মৃত্যুর বিষয়টি অমিমাংসিত থেকে যায়। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে বাবার লাশ শনাক্ত করে তার ইচ্ছা অনুযায়ী কানাইঘাটে দাফন করতে পারব, যার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি।’
আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবুল হারিছ চৌধুরী মারা যান। ৪ সেপ্টেম্বর প্রফেসর মাহমুদুর রহমান নামে ঢাকার সাভারে একটি মাদরাসায় তার লাশ দাফন করা হয়। এরপর সামিরা চৌধুরী প্রফেসর মাহমুদুর রহমানই তার বাবা আবুল হারিছ চৌধুরী দাবি করে লাশের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালতের নির্দেশে তার লাশ কবর থেকে তোলা হয়। এরপর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। বর্তমানে তার লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এইচ